বাঁকুড়া জেলার আর পাঁচটা মহকুমা শহরের মতোই বিষ্ণুপুরও সাধারণ মাপের একটি শহর এবং এখানকার জীবনযাপনও বড়ই সাদামাটা। কিন্তু এই শহরের বিশেষত্বটা তার ঐতিহ্য-গরিমায় ; আর অসংখ্য মন্দির ও অসীম শিল্পসম্ভারের সমৃদ্ধতায়। এই শহরের ইতিকথা বহু প্রাচীন ।
সুদূর প্রাচীনকাল থেকে মল্লরাজদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিষ্ণুপুরে মন্দির, স্থাপত্য, সংগীত, চিত্রকলা, ভাস্কর্য, গণিত সকল বিষয়েই প্রভূত উন্নতি ঘটেছিল। বাংলার একান্ত নিজস্ব স্থাপত্যশৈলী ও টেরাকোটা শিল্পের যে বিকাশ ঘটেছিল তা মূলত তাঁদের সময় থেকেই।
বিষ্ণুপুর যে ‘মন্দির নগরী’ নামে খ্যাত তা অবশ্যই তার মন্দিরের বাহুল্যতার কারনে। রাজ্যের অন্য কোন শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে এমন নজির মেলে না। বিষ্ণুপুর সম্পর্কে বিখ্যাত অধ্যাপক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় কিছুটা আক্ষেপের সঙ্গে বলেছেন, “বিষ্ণুপুর প্রাচীন মন্দিরে ও নানাবিধ শিল্পকার্যে বাংলাদেশের সমস্ত নগরগুলির শীর্ষস্থানীয়। কিন্তু এই বিষ্ণুপুরকে বাঙ্গালি জনসাধারণ দেখিল না, চিনিল না, আদর করিতে শিখিল না”। কথাগুলো যে কতটা সত্যি তা নিজের চোখে না দেখলে অনুভব করা যায় না।
গত এপ্রিলে ‘বিষ্ণুপুর নেচার ক্লাব’ আয়োজিত ‘মল্লভূম ফটোগ্রাফি এক্সিবিশন’ ছিল ওখানকার প্রাচীন রামসরণ মিউজিক কলেজে। খুব অল্প সময়ের জন্য গেছিলাম বিষ্ণুপুর। সেই কারনে কয়েকটি মাত্রই মন্দির দর্শন করার সৌভাগ্য হয়েছিল। তবে যাওয়ার আগে বিষ্ণুপুরের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিষয়ে একটা সাধারণ কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। আর অবশ্যই তা পোড়ামাটির কাজ সংক্রান্ত। তাই বইপত্র ঘাঁটাঘাঁটিও চলছিল বিস্তর। তবে সত্যিই ওখানে গিয়ে মন্দিরের গায়ে যেসব টেরাকোটার স্থাপত্য আর কারুকার্য দেখেছিলাম তা ভাষায় অবর্ণনীয়।
পুরো শহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মন্দিরের মিছিল। তবে শ্যামরায়, জোড়বাংলা এবং মদনমোহন টেরাকোটা সমৃদ্ধ এই তিনটি মন্দির আমার স্বচক্ষে দেখার সুযোগ হয়েছিল। কিছুটা স্থানীয় মানুষজনের সাহায্যেই সেই সব ছড়িয়ে থাকা ইতিহাস এবং ঐতিহ্য গরিমায় পরিপূর্ণ মন্দিরগুলি দেখার অভিপ্রায় নিয়ে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছিলাম।
বাতাসের সাথে যেমন অক্সিজেন মিশে থাকে তেমনি ওখানকার জলে-স্থলে-বায়ুমন্ডলেও যেন মিশে আছে আধ্যাত্ম চেতনা, ঈশ্বর ভাবালুতা। শহরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, মল্ল বংশের প্রতিষ্ঠাতা আদিমল্ল ৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে রাজা হিসেবে সিংহাসনে বসেন। যিনি বাগদি রাজা নামে পরিচিত ছিলেন। তবে মল্ল বংশের স্বর্ণযুগ শুরু হয়েছিল সপ্তদশ শতকে। শক্তি সাধনার মাধ্যমে এই রাজবংশের উত্থান ঘটলেও পরবর্তীকালে এখানকার রাজারা চৈতন্য শিষ্য শ্রীনিবাস আচার্যের কাছে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর শিল্প ও মন্দির গড়ার কাজে নজর দেন। সেইসময় থেকে এখানে বৈষ্ণব ধর্মের প্লাবন আসে। তাদের রাজ্যশাসন প্রণালীর গুণে অবিভক্ত বাংলায় বিষ্ণুপুর এক বৃহত্তম রাজ্যে পরিণত হয়েছিল এবং বৈষ্ণব ধর্মের তীর্থস্থান ছাড়াও সব বিষয়ে সমৃদ্ধির শীর্ষ শিখরে সমুন্নত হয়েছিল। হয়ে উঠেছিল রত্নগর্ভা ।
বহুআগে প্রদ্যুম্নপুরে মল্লরাজাদের রাজধানী থাকলেও পরবর্তীকালে তা বিষ্ণুপুরে স্থানান্তরিত হয়। বিষ্ণুপুর নামকরণের পিছনে যেসব কারণ উল্লেখিত রয়েছে তার মধ্যে মনে করা হয় এখানে একটি ওই নামে গ্রাম ছিল। আবার মনে করা হয় মল্ল রাজাদের কুলদেবতা হলেন অনন্তদেব অর্থাৎ ভগবান বিষ্ণু সেই অনুসারেই তাঁরা তাঁদের রাজ্যের এমন নামকরণ করেন ।
মল্লরাজ বীরহাম্বির দ্বারা স্থাপিত রাসমঞ্চের এখানেই সমস্ত মন্দিরের টিকিট কাটার ব্যবস্থা। তাই স্বল্পদীর্ঘের ভ্রমণটি এখান থেকেই শুরু করেছিলাম। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত স্থাপত্য শিল্পটি মাকড়া পাথর বা ল্যাটেরাইট স্টোন দ্বারা তৈরি। ১৩০ টি দরজা রয়েছে এখানে। পিরামিড আকৃতির চারচালা মন্দিরে টেরাকোটার কাজ সেভাবে দেখা যায় না। চুন-সুরকির গাঁথনি এবং ইঁটের খিলান ছাদের মজবুত মঞ্চটি আধুনিক স্থাপত্য-বিদ্যা বিশারদদের কাছেও বড় বিস্ময়ের বিষয়। সারি সারি স্তম্ভ, দরজা এবং তিনপ্রস্থ অলিন্দ পথের ফাঁকে ফাঁকে আলো ছায়ার লুকোচুরি খেলার যে মায়াময় পরিবেশ তার ছোঁয়ার আবেশে আপ্লুত হয় হৃদয়। শোনা যায় প্রাচীনকালে কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে রাসপূর্ণিমাতে মল্লভূমিতে ছড়িয়ে থাকা সমস্ত বিগ্রহের সমাবেশ ঘটিয়ে উৎসব হতো। শুশোভন দরজাগুলোতে বিগ্রহগুলিকে স্থাপন করা হতো। তবে বর্তমানে সেই প্রথা আর প্রচলিত নেই।
শ্যামরাই মন্দিরটি পঞ্চরত্ন নামেও পরিচিত। বীর হাম্বিরের পুত্র রঘুনাথ সিংহ ১৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে এটি স্থাপন করেন। কৃষ্ণলীলার অসংখ্য চিত্রের পাশাপাশি এই মন্দিরের টেরাকোটার একাধিক স্থানে বেশ কিছু বিষ্ণু অবতার মূর্তিও স্থান পেয়েছে। রামসীতার চিত্র ও পরিলক্ষিত হয়। আসলে ষোড়শ শতকে ভক্তিভাবের যে বন্যা বয়েছিল তাতে রামকথা আর কৃষ্ণকথা সমভাবে পরিষিক্ত হয়েছিল। তবে বৈষ্ণব প্রভাব ছাড়াও এই মন্দির শৈব, শাক্ত, ব্রাহ্মণ্য,গাণপত্য, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রভাব পুষ্ট। পশ্চিমবঙ্গের যাবতীয় টেরাকোটা মন্দিরের মধ্যে শ্যামরাই মন্দিরটি যে সর্বশ্রেষ্ঠ তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। মন্দিরটিকে মনোরঞ্জন চন্দ্র তার ”মল্লভূম বিষ্ণুপুর ” পুস্তকে টেরাকোটার তাজমহল বলে আখ্যা দিয়েছেন। অন্তহীন প্রাচুর্য ও সুকুমার লালিত্য শিল্পীদের অপূর্ব কৃতিকুশলতারই পরিচয় বহন করে। এই মন্দিরে শুধু ভারতের বিভিন্ন ধর্ম বা ধর্ম সম্প্রদায়ের উপাসক নয় ভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মানুষের চিত্র বিধৃত হয়েছে। এর থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে মন্দির নির্মাতা ব্যক্তি সমস্ত রকমের ধর্মীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে তার শিল্পকর্তাকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন।
এরপর জোড়বাংলার দিকে রওনা দিই। শিকারের চিত্র, সপ্তদশ শতকে মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের যুদ্ধের চিত্র, রামায়ন মহাভারতের যুদ্ধের চিত্র যেমন এখানে দেখতে পাওয়া যায় তেমনি তৎকালীন সমাজের চিত্র ও পরিলক্ষিত হয়। মহেঞ্জোদারোর শিলমোহরে যে বিচিত্ররূপী জানোয়ার চিত্র দেখা যায় এই জোড়বাংলাতেও সেইরূপ চিত্র পরিদর্শিত হয়। এই প্রসঙ্গে গবেষক চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত তার জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য করেছেন; ”শ্যামরায়ের মন্দিরে প্রাধান্য পেয়েছে ইমোশন আর লিরিক অন্যদিকে জোড়বাংলায় টেরাকোটার চিত্রে ভাস্বর হয়েছে অ্যাকশন আর এপিক”।
এরপর পথের পাশে একটি দরজা-জানলা ও ছাদবিহীন ইট দিয়ে তৈরি গুমঘর ইমারত নজরে আসে । এটি জলাধার বা চৌবাচ্চা ছিল বলে মনে করা হয়। জলাধারের একদিকে একটি পরিখা রয়েছে। এই পরিখাটি ফোয়ারাখানা নামে পরিচিত ছিল। চৌবাচ্চার তলদেশে মোটা মোটা কয়েকটি নলের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। শোনা যায় প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত অপরাধীদের অস্ত্রশস্ত্র প্রথিত এই ইমারতের মধ্যে নিক্ষেপ করা হতো। তবে সমাজের বিদগ্ধ ব্যক্তিদের অভিমত ধর্মপ্রাণ রাজাদের রাজবাড়ীর সন্নিকটে এমন বধ্যভূমি থাকার কথা নয় বরং কিছুটা দূরত্বে কোতলখানা ছিল। ওই অঞ্চলটির নাম হয় বধিলাপাড়া যা বর্তমানে বিকৃত হয়ে হয়েছে বইলাপাড়া। তবে ইমারতটিতে বয়সের ছাপ পড়লেও এখনো প্রায় অক্ষত অবস্থাতেই রয়েছে।
মল্লভূমির নিরাপত্তা নিয়ে তৎকালীন রাজাদের প্রখর দৃষ্টি ছিল। রাজধানীর নিরাপত্তার জন্য শত্রুপক্ষের হাত থেকে রক্ষা করতে অনেকগুলি গড় নির্মাণ করেছিলেন তাঁরা। সেসব গড়ের খাঁজে খাঁজে রাখা থাকতো কামান। এরই বড় উদাহরণ হল গড় দরজা এবং মাকড়াপাথরের দলমাদল কামান। রাজবাড়িকে সুরক্ষিত রাখতে তার চারপাশে পরিখা খনন করে জল ছেড়ে রাখা হতো। নগরবাসীর যাতে গ্রীষ্মে কষ্ট না হয় সেজন্য সাতটি বাঁধ খনন করা হয়েছিল।
শাঁখারিবাজারে মদনমোহন মন্দিরটির গঠনশৈলী, টেরাকোটার কাজ বড় মনমুগ্ধকর। এখানে পৌঁছে দেবদর্শন করে মন ভরে গেছিল। রাজা দুর্জনদেব ১৬৯৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটার স্থাপত্য অলংকরণে পৌরাণিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক, লৌকিক ইত্যাদি নানা ঘটনার প্রতিফলন দেখা যায়। প্রবীণ গবেষক চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেছেন কৃষ্ণলীলার পাশাপাশি শৈব ও শাক্ত মোটিফের বিপুল সমাবেশ বিষ্ণুপুরের টেরাকোটার মন্দির গুলিতে পরিলক্ষিত হয়। মন্দিরটিতে তৎকালীন সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। তবে রাজাদের মন্দির তৈরীর যে উদ্দেশ্য তা শুধুমাত্র উপাসনা কেন্দ্রিক বা সুন্দর আরাধনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না লোকশিক্ষাও যে উদ্দেশ্য ছিল তা ভালোভাবে খেয়াল করলেই বোঝা যায়।
জোড়বাংলার গা ঘেঁসে রাধাশ্যাম মন্দিরটি ল্যাটেরাইট পাথর দিয়ে তৈরি, অঙ্গসজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে চুনাপাথর। অসাধারণ কারুকার্যমণ্ডিত টেরাকোটার গঠনশৈলীর জন্য পঞ্চরত্ন মন্দির এবং রাসমঞ্চ পুরাকীর্তি দুটি ”ন্যাশনাল হেরিটেজ” এর মর্যাদা পেয়েছে।
শিল্প ও শিল্পীর দেশ মল্লভূমি। বালুচরী বস্ত্র, শাঁখের গহনা কাঁসা, পিতল, মাদুলি, বেলমালা, টেরাকোটার মূর্তি, ঢোকরা, লন্ঠন শিল্প এখানকার জগৎবিখ্যাত। শিল্পচর্চার পাশাপাশি মল্লরাজাদের রাজত্বকালে সাহিত্যচর্চাও যে নিয়মিত হতো তা এখানকার প্রচলিত ছড়া, প্রবাদ, ধাঁধা দেখে অনুমান করা যায় । টোল, মক্তব ও পাঠশালাগুলিতে শিক্ষাদানও করা হতো। ধর্মভিত্তিক ও ধর্মকেন্দ্রিক মল্লরাজ্যের সমাজ ব্যবস্থায় দেব-মন্দির সংলগ্ন নাটমন্দিরে বা আটচালাগুলিতে প্রাপ্তবয়স্কদের সমবেত হওয়ার নিয়ম ছিল বাধ্যতামূলক। সেখানে নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হতো। মানুষের মনুষ্যত্ব, বিবেক ও নীতিবোধকে জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে এই সকল প্রথা প্রচলিত ছিল। বর্ণাশ্রমের ভিত্তিতে সমাজ গড়ে উঠলেও বর্ণবিদ্বেষ ছিল না বলেই জানা যায় ।
রাজা বীরহাম্বিরের রাজত্ব কালে শ্রীবাস আচার্য যখন বৃন্দাবন থেকে বিষ্ণুপুরে এসেছিলেন তখন তার সাথে এলো অগাধ জ্ঞান-গরিমা গভীর ঈশ্বরানুরাগ, বৈষ্ণবের বিনয় ও ভক্তি-বিগলিত ভাবধারা। এলো বৈষ্ণব কবিদের কাব্য সুললিত পদাবলী সুমধুর কীর্তন আর ভোগ-রাগে ছানার মিষ্টান্ন নিবেদনের প্রথা। তাই পরবর্তীকালে বিষ্ণুপুরের মিষ্টি বিখ্যাত হয়েছিল। আজও বিষ্ণুপুরের মতিচুরের লাড্ডু সর্বজন সমাদৃত।
বিষ্ণুপুর ও সঙ্গীত যে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত তা অনুমিত হয় বিষ্ণুপুরের সংগীত বিদ্যালয় তথা রামশরণ মহাবিদ্যালয়কে দেখে। সংগীত অনুরাগী রাজা রামকৃষ্ণ সিংহ দেব এটি নির্মাণ করান। বিষ্ণুপুর ঘরানার সংগীত চর্চার পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন ঐতিহ্যপূর্ণ ঘরানার সংগীত এখানে আজও যত্ন সহকারে শেখানো হয়। এমনকি এখানকার রাজপরিবারের নানারকম পূজা এবং মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে একসময় বিভিন্ন রাগ-রাগিনী সহকারে মন্ত্র পাঠের প্রথাও প্রচলিত ছিল।
মল্লনৃপতিগন চিত্তবিনোদনের জন্য দশঅবতার তাস বা ওরকের সৃষ্টি করেছিলেন । রাজাদের আধ্যাত্ম চেতনার আরো একটি উদাহরণ এই দশ অবতার তাস। প্রায় ৪০০ বছর আগে বীরহাম্বিরের রাজত্বকালে এটি সৃষ্টি হয়েছিল। উড়িষ্যা ও মুঘল নবাব দরবারের যৌথ প্রভাব এখানে পরিলক্ষিত হয়।
একসময় গুপ্ত বৃন্দাবন নামে খ্যাত বিষ্ণুপুরের বেশ কিছু মন্দির সরকারি আওতায় এলেও সমস্ত পুরাকৃতি নিদর্শন রক্ষণাবেক্ষণ আজও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ইতিহাসের কয়েক শতাব্দীর পর আজ দেশের ঐতিহাসিক পর্যটক ক্ষেত্র হিসেবে বিষ্ণুপুর সমুজ্জ্বল হয়ে উঠছে । ইদানিং বিদেশী পর্যটকদের কাছে এইসব প্রাচীন ঐতিহ্যের অনবদ্য শিল্পকর্মের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। পর্যটনকে কেন্দ্র করে তাই মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ছে।
দু-একদিনের ছুটিতে এমন ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমন করা যায় খুব সহজেই। আর বিষ্ণুপুরের এমন গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে জানার পর খুব স্বাভাবিকভাবেই মনে হয় যে যিনি বিষ্ণুপুরের দেবালয়গুলি দেখেননি তিনি বাঙালি হয়েও বাংলার অমরাবতীর দর্শন থেকে বঞ্চিত থেকেছেন।
কুহেলী ব্যানার্জী